ওজন করে পশু কিনে কোরবানি দিলে শুদ্ধ হবে?

ইসলাম

ইসলামি শরিয়তে ক্রয়-বিক্রয় শুদ্ধ হওয়ার মূলনীতি রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার অস্তিত্ব থাকা, পণ্য ও মূল্য নির্ধারণ হওয়া, উভয়ের সম্মতিতে প্রস্তাব-গ্রহণ সম্পন্ন হওয়া, অপবিত্র বস্তু ক্রয়-বিক্রয় না করা, প্রতারণার আশ্রয় না নেয়াসহ আরও মূলনীতি রয়েছে।

‘যার সামর্থ্য আছে তবুও সে কোরবানি করল না (অর্থাৎ কোরবানি করার সংকল্প তার নেই) সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১)

ওজন করে পশু কিনে কোরবানি দিলে শুদ্ধ হবে কিনা? এ নিয়ে মূল কথা হচ্ছে- কী উদ্দেশ্যে কোরবানি দেয়া হচ্ছে? গোশত খাওয়ার জন্য নাকি মহান আল্লাহর বিধান পালনের জন্য? কোরবানির সঙ্গে ঐতিহাসিক হৃদয়বিদারক ঘটনা জড়িয়ে আছে। তাই শুধু গোশত খাওয়াই যেন কোরবানির মূল লক্ষ্য না হয়। বরং কোরবানির যে শিক্ষা তা হৃদয়ে ধারণ করে কোরবানি দেয়া উচিত।

ইসলামি শরিয়তে ওজন করে পশু কিনে কোরবানি দিলে নাজায়েজ বলা হয়নি। এ প্রসঙ্গে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, যদি পছন্দের গরু বা অন্য পশু আলোচনাসাপেক্ষে কেজিপ্রতি মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিতে উভয়ে সম্মত হয়ে বেচা-কেনার চুক্তি সম্পন্ন করে,  এ বেচাকেনা বৈধ বলে বিবেচিত হবে। আর যখন এ বেচা-কেনা বৈধ, তখন এ পদ্ধতিতে ক্রয় করা পশু কোরবানিও জায়েজ। (ফতোয়ায়ে উসমানি: খণ্ড-৩, পৃ-৯৯ এর টিকা দ্রষ্টব্য, আহসানুল ফতোয়া: খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৯৭) 

উপরন্তু এ পদ্ধতিতে ক্রেতা-বিক্রেতার ধোঁকাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এ ছাড়া আলোচ্য পদ্ধতিটি পশুর মূল্য নির্ধারণের একটি প্রক্রিয়া মাত্র। 

আগেকার সময়ে বেচাকেনার এই নিয়মের কথা ভাবাও যেত না, কারণ এভাবে পশুর নিশ্চিত মূল্য স্পষ্ট হওয়ার সুযোগ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে ওজন করে বেচাকেনার এই পদ্ধতিতে চুক্তির মজলিসেই যখন সঠিক পরিমাপ বের করা হয়, তখন তার পুরো মূল্যও উভয়পক্ষের জানা হয়ে যায়। 

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যার সামর্থ্য আছে তবুও সে কোরবানি করল না (অর্থাৎ কোরবানি করার সংকল্প তার নেই) সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১)