লিসবনে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে করোনার ভয়াবহ ছোবল

আন্তর্জাতিক কোভিড-১৯

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনার প্রথম আঘাতে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে সংক্রমণের হারও ছাড়িয়ে গেছে বর্তমানের সংক্রমণ পরিস্থিতি।

বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে লিসবনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ প্রবাসী বাংলাদেশি করোনা সংক্রামিত এবং পুরো পর্তুগালের প্রবাসী বাংলাদেশি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আনুমানিক ১৫০ জনেরও বেশি এবং এদের বেশির ভাগেরই অবস্থা সংকটজনক অর্থাৎ অধিকাংশই উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণে এবং পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হওয়ায় অনেকেই বাংলাদেশ পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না এবং বাংলাদেশ থেকেও পরিবার এখানে বসবাসরত ব্যক্তিদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করছেন। নিরুপায় হয়ে স্বজনের খোঁজ পাবার জন্য অনেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
 
প্রবাসী সাংবাদিক তারিকুল হাসান আশিক জানান, আমাদের সংক্রমিত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে অসচেতনতা যেমন সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান না করা, একে অন্যের সঙ্গে হাত মেলানো, শারীরিক দূরত্ব বজায় না রাখা। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর কারণ হচ্ছে করোনার উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকার ভয়ে টেস্ট না করে স্বাভাবিক জীবনযাপনের মতো অপরের সংস্পর্শে আসেন ফলে আশপাশের ব্যক্তিরা খুব সহজেই আক্রান্ত হচ্ছেন- এটি খুবই দুঃখজনক বিষয় আমাদের জন্য।

প্রবাসীদের করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলোর জন্য একটি কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে; কেননা এখানে সকলেই শুধুমাত্র স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন এবং দেখা যাচ্ছে স্বামী-স্ত্রী দুজন আক্রান্ত হওয়ার ফলে সন্তানের দেখভাল করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে এমনকি মাঝে মাঝে স্বামী-স্ত্রী দুজনই হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে সেক্ষেত্রে সন্তানদের জন্য  এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সর্বমোট  ৯৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯১ জন করোনা টিকা গ্রহণ করেছেন পর্তুগালে; যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৯৪ শতাংশ এর চেয়েও বেশি। তবে এর মধ্যে  প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭৬ জন এবং পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন ৩৬ লাখ ৩ হাজার ৯১৫ জন। 

উল্লেখ্য, রাজধানী লিসবনসহ পুরো পর্তুগালে উচ্চ করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৩ জুলাই পর্যন্ত পর্তুগালে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ লাখ ১২ হাজার ৪০৬ জন, করোনায় মৃত্যু হয়েছে  ১৭ হাজার ১৭৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৫০ হাজার ৩৪ জন।