জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হেনস্তার অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করা হয়েছে। রোববার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের নাম মেহমুদ হারুন। তিনি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কর্মরত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনসংলগ্ন সড়কে এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেন এক পুলিশ কনস্টেবল ও তার সঙ্গে থাকা এক যুবক যার নাম বিদ্যুৎ চৌধুরী। এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রী তার মীর মশাররফ হোসেন হলের বন্ধুদের কল করেন। এ সময় অভিযুক্তদের মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন দোকানের সামনে দেখলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং তার বন্ধুরা তাদের ধাওয়া করলে অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন ফটক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
এ সময় পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে থাকা ব্যক্তি পালিয়ে গেলেও ওই কনস্টেবলকে ধরে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে বেধড়ক মারধর করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে তুলে দেওয়া হয় তাকে।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, আমি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের রাস্তা দিয়ে হলে ফিরছিলাম। বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে মোড়ে যখন আসি তখন দুজন লোক আমার গতিরোধ করে এবং আমি ক্যাম্পাসের কিনা জিজ্ঞাসা করে। আমি ফরমাল পরিচয় দিই। কিন্তু পরক্ষণেই উনাদের আচরণে বুঝি যে উনারা ক্যাম্পাসের না। আমি চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা এ সময় আমার পথ আটকায় এবং আমাকে হেনস্তা করা শুরু করে।
একপর্যায়ে আমাকে “জঙ্গলে চলো”সহ এ রকম আরও যৌন নিপীড়নমূলক ও আপত্তিকর বিভিন্ন কথা বলা শুরু করে এবং আমার ফোন নাম্বার চায়। ওই মুহূর্তে আমি একটা রিকশা দেখে দ্রুত উঠে স্থান ত্যাগ করতে চাইলে তারা বারবার রিকশা থামায় এবং আমার নাম্বার দিতে জোরাজুরি করে। একপর্যায়ে আমি কোনোভাবে রিকশাওয়ালার সহায়তায় ওই স্থান ছেড়ে এমএইচ হলের সামনে এসে আমার বন্ধুদের কল দিই। এ সময় এমএইচ হলের সামনে তাদের আবার দেখতে পাই এবং তাদের ধরতে উদ্যত হলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি ও আমার বন্ধুরা একজনকে ধরতে পারি এবং বাকি একজন পালিয়ে যায়।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এ সময় তার কাছে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি ও আইডি কার্ড পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য প্রাথমিকভাবে তার দোষ স্বীকার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি অবহিত হয়েছি। সে যা করেছে তা আমাদের পুলিশদের জন্য অসম্মানের। অফ ডিউটিতে থাকাকালীন সে ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাপ ব্যবহার করেছে, যা অবৈধ। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সে যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।