হুথি গোষ্ঠীর যোদ্ধা আছে দুই লাখ

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনের একটি প্রধান আঞ্চলিক শক্তি হুথি (বিদ্রোহী সংগঠন)। নব্বইয়ের দশকে উদ্ভব হওয়া সশস্ত্র বিদ্রোহী এ সংগঠন আনসারুল্লাহ নামেও পরিচিত। ২০১৪ সালে দেশটির রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর, হুথিরা দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে উত্তরে। নিজেদের জায়গা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের সামরিক ক্ষমতাও বাড়িয়েছে দেশটিতে। শুক্রবার এএফপির খবরে বলা হয়েছে, তারা ক্রুজ মিসাইল এবং ড্রোনসহ একটি উল্লেখযোগ্য অস্ত্রাগার তৈরি করেছে। 
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানি সরঞ্জাম বা উপাদান দিয়ে তৈরি তাদের অস্ত্রাগারের মধ্যে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি ড্রোনও রয়েছে। 

যোদ্ধা

প্রতিবেদন অনুসারে, বেশ কয়েক বছর আগে থেকে অনুমান করা হয়, এই সংগঠনে প্রায় দুই লাখ যোদ্ধা রয়েছে। যারা ইয়েমেনের মরু ও পাহাড়ি ভূখণ্ডে যুদ্ধ করতে সক্ষম।

ক্ষেপণাস্ত্র

ব্রিটিশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) গবেষণা সহকর্মী ফ্যাবিয়ান হিঞ্জের মতে, হুথিদের টাইফুন নামের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এটি এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৯০০ কিমি. (৯৯৫ থেকে এক হাজার ১৮০ মাইল) রেঞ্জের ইরানি কদর ক্ষেপণাস্ত্রের একটি নতুন সংস্করণ। ইরান ২০১৬ সালে তার কদর ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল। প্রায় এক হাজার ৪০০ কিমি. (৮৭০ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা নাভান্তি গ্রুপের সিনিয়র বিশ্লেষক মোহাম্মদ আলবাশা বলেছেন, ৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে হুথিরা তাদের টাইফুন মিসাইল অস্ত্রাগার উন্মোচন করে। হিঞ্জের মতে, বিদ্রোহীদের কাছে ইরানের কুদস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। কুদসের বিভিন্ন সংস্করণ রয়েছে।

যার মধ্যে কয়েকটির প্রায় এক হজার ৬৫০ কিমি. পর্যন্ত অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন হিঞ্জ। তিনি আরও বলেছেন, ২০২২ সালে, হুথিরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে আঘাত করার জন্য কুদস-২ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। এছাড়াও ২০২০ সালে সৌদি আরবে আঘাত হানার জন্যও কুদস-২ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল।

ড্রোন

হিঞ্জ বলেছেন, হুথির অস্ত্রাগারে ইরানের শাহেদ-১৩৬ ড্রোন রয়েছে। এটি রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে। হিঞ্জের মতে, ড্রোনগুলোর পরিসীমা প্রায় দুই হাজার কিমি.। আরও বলেছেন, সামাদ-৩ নামে আরেকটি ড্রোন মডেলের কথাও জানা গেছে। আমরা এর সঠিক পরিসীমা জানি না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি প্রায় এক হাজার ৬০০ কিমি. যেতে পারে। হুথিরা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে হামলায় সামাদ-৩ ড্রোন ব্যবহার করেছে। বিদ্রোহী মিডিয়া সূত্র এবং বিশ্লেকদের মতে, সামাদ-৩ তে ১৮ কিলোগ্রাম (৪০ পাউন্ড) বিস্ফোরক লাগানো যেতে পারে। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের বিশেষজ্ঞরা ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদনে লিখেছেন, হুথিদের ড্রোনগুলোতে জিপিএস নির্দেশিকা (স্বয়ংক্রিয় নির্দেশিকা) ব্যবহার করে। ফলে ড্রোনগুলো তাদের লক্ষ্যগুলোর দিকে প্রাক-প্রোগ্রামড ওয়েপয়েন্ট বরাবর স্বায়ত্তশাসিতভাবে উড়ে যেতে পারে।