করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক লকডাউন আগামী সোমবার নয়, ১ জুলাই বৃহস্পতিবার শুরু হবে। কঠোর এই লকডাউনেও রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাসহ শিল্পকারখানার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে। তবে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা কী হবে, তা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাংক খোলা থাকলে শেয়ারবাজারও চালু থাকবে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও পণ্য পরিবহন যথারীতি চলবে।
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া লকডাউনেও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে পোশাক কারখানাসহ শিল্পকারখানা চালু থাকবে।
মোহাম্মদ হাতেম, সহসভাপতি, বিকেএমইএ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে আজ শনিবার রাতে অনলাইন মাধ্যমে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তই হয়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠকে অংশ নেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বৈঠক সূত্র জানায়, সোমবার থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হলেও অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সোমবার থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হবে। এই সময়ে কিছু বিষয় খোলা থাকবে। আর ১ জুলাই থেকে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।
লকডাউনে কারখানা বন্ধ রাখলে শ্রমিকেরা গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেবে। তাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। আমাদের ৯০ শতাংশ শ্রমিকই গণপরিবহন ব্যবহার করে না, তারা কারখানার আশপাশে থাকে।
শহিদউল্লাহ আজিম, সহসভাপতি, বিজিএমইএ
জানতে চাইলে বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, করোনার প্রথম থেকেই সুশৃঙ্খলভাবে পোশাক কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। বিষয়টি বৈঠকে প্রশংসিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া লকডাউনেও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে পোশাক কারখানাসহ শিল্পকারখানা চালু থাকবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে গতকাল শুক্রবার রাতে সরকারের এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ২৮ জুন সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। এ সময় সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
সরকারের এই তথ্য বিবরণীর পর থেকেই কঠোর লকডাউনে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু থাকবে কি না, সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারাও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছিলেন না। তাঁরা সরকারকে কারখানা খোলা রাখতে অনুরোধ করেন। সরকার কী নির্দেশনা দেয়, তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন নেতারা। অবশ্য গত এপ্রিলের মাঝামাঝি শুরু হওয়া লকডাউনের মধ্যেও শিল্পকারখানা চালু ছিল।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম শনিবার দুপুরে বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা ও কাভার্ড ভ্যান চালু রাখতে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে অনুরোধ করেছি। কারণ, লকডাউনে কারখানা বন্ধ রাখলে শ্রমিকেরা গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেবে। তাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। আমাদের ৯০ শতাংশ শ্রমিকই গণপরিবহন ব্যবহার করে না, তারা কারখানার আশপাশে থাকে। আবার উৎপাদন বন্ধ থাকলে ক্রয়াদেশ চলে যাবে।’