কতকিছুই না আমার ভাবনার জালে আটকে যাচ্ছে; কোনটাকে ধরি আর কোনটাকে ছাড়ি? যেন মাকড়শার জালের মধ্যে পরে উদ্ধারের উপায় খুঁজছি! বর্তমান বিশ্ব এখন সবচেয়ে এক ভয়াবহ যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে পার হচ্ছে, মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে অদৃশ্য শক্তি করোনা।
অতীতে হলিউডের বিভিন্ন পরিচালকের হাতে তৈরি অনেক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী হয়েছে; যার সঙ্গে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায় I
এটা এখন খুব পরিষ্কার- একদিকে মানুষ তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে চেষ্টা করে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা বের করে বর্তমান সভ্যতাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, আবার অন্যদিকে করোনাভাইরাসও তার অদৃশ্য রূপকে বারবার পরিবর্তন করে যুদ্ধে টিকে থাকার চেষ্টায় মত্ত, অদ্ভুত এক যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান!
এ যুদ্ধাবস্থায় টিকে থাকার জন্য এখন পর্যন্ত তৈরি প্রতিষেধক টিকার কোনো বিকল্প আর কিছু আছে বলে মনে হচ্ছে না; যদিও কিছু মানুষ এখনো এই টিকার ওপর ভরসা করতে পারছে না, এটা থাকবেই তার মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।
বিশ্ব অর্থনীতি এক ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে, সারা বিশ্বের জিডিপি প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে; যার ফলে পৃথিবীর জনগোষ্ঠীর একটি অংশ আবারো দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে I
পৃথিবীর জনসংখ্যার খুব অল্প সংখ্যক মানুষ এখন টিকার সংস্পর্শে এসেছে- শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোই তাদের জনসংখ্যার জন্য এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত টিকার আয়োজন করতে পেরেছেI জি-৭ সম্মেলন থেকে তারা ১০০ কোটি টিকার বিনামূল্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করতে চেয়েছে, চীন তো উচ্চমূল্যে বিক্রি করছেI আরও অনেক অনেক বেশি পরিমাণ টিকার সংস্থান হওয়া খুবই জরুরি I
ছোটবেলা থেকেই মানবতার গল্প শুনে আসছি, এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও উন্নত বিশ্বগুলোকে আরও মানবিক হতে বলছে, কিন্তু বাস্তব সত্য তাদের এ বাণী কতখানি শ্রবণযোগ্য সেটাই বিরাট প্রশ্ন?
তবে আশাবাদী মানুষ হিসেবে আমি এখনো বিশ্বাস করতে চাই- সুড়ঙ্গের মুখের আলোর ঝলকানি এক সময় পুরো পৃথিবীকেই আলোকিত করে তুলবে- মানব সভ্যতার জয় হবেই একদিন।