চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল ওরফে বালির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জাতীয়তা সনদ দিয়ে তিন রোহিঙ্গাকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট করতে সহায়তার অভিযোগে এই মামলা করা হয়। দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়–২–এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে আজ সোমবার এই মামলা করেন।
দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ে হওয়া মামলায় প্রধান আসামি হলেন ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল (৪৯)। এ ছাড়া আরও পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ওয়ার্ড কার্যালয়ের জন্মনিবন্ধন সনদ সহকারী সুবর্ণ দত্ত, পাসপোর্ট কার্যালয়ের দালাল মো. সিরাজুল ইসলাম ও সুবিধাভোগী তিন রোহিঙ্গা মো. ইসমাইল (৫৬) ও তাঁর স্ত্রী মেহেরজান (৪২) এবং অহিদা (২৬)। ইসমাইল ও মেহেরজানকে মা–বাবা উল্লেখ করে অহিদা জাতীয়তা ও জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
বাদী মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, কাউন্সিলর থাকার সময় এই তিন রোহিঙ্গাকে জাতীয়তা সনদ দিয়ে এনআইডি ও পাসপোর্ট পেতে জাতীয়তা এবং জন্মনিবন্ধন দিয়ে সহায়তা করেছেন ইসমাইল। এ ছাড়া পাসপোর্টে সত্যয়ন ও প্রত্যয়ন করেছেন। ছয়জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল গত ২৭ জানুয়ারি করপোরেশনের নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে সহিংসতার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। ওই নির্বাচনে পাথরঘাটা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পুলক খাস্তগীরের কাছে পরাজিত হন বিএনপির এই সাবেক কাউন্সিলর।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, রোহিঙ্গা নাগরিক অহিদা ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পাসপোর্ট করার জন্য পাথরঘাটা ওয়ার্ড কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করেন। পরে কাউন্সিলর ইসমাইলের স্বাক্ষরে তিনি জাতীয়তা ও জন্মনিবন্ধন সনদ পান। পাথরঘাটা কলেজ কেন্দ্রে ভোটার ও এনআইডির জন্য ছবিও তোলেন অহিদা। একই বছরের ১৯ নভেম্বর অহিদা দালাল সিরাজুলসহ পাসপোর্ট উত্তোলনের জন্য নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আটক হন।
পরে সফটওয়্যারের মাধ্যমে আঙুলের ছাপ দিয়ে অহিদাকে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত করা হয়। মো. ইসমাইল ও মেহেরজান তাঁর প্রকৃত মা–বাবা নন বলেও অহিদা স্বীকার করেন। তবে তাঁরা দুজনও রোহিঙ্গা। তাঁরা পাথরঘাটার ঠিকানা ব্যবহার করে কাউন্সিলর ইসমাইলের মাধ্যমে ২০১৭ সালে নিজেদের এনআইডি ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন বলে অভিযোগ করা হয়।এজাহারে বলা হয়, অন্যায়ভাবে সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গা নারী–পুরুষকে জাতীয়তা ও জন্মসনদ দিয়েছেন তখনকার কাউন্সিলর। এ জন্য দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কাউন্সিলরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।