কুষ্টিয়ায় একদিনে আরও ৯ জনের মৃত্যু

কোভিড-১৯

কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আটজন করোনায় ও এক রোগী উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়েছে।

জানা যায়, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে  ২০০ শয্যার করোনা ইউনিটে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ২২৭ জন। এর মধ্যে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮৫ জন এবং ৪২ জন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন।

এদিকে নতুন ২১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১৬ জনে। নতুন ৭৫ জনসহ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬৯৪ জন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৭৫ জনই কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা।

এখন পর্যন্ত জেলায় ৯০ হাজার ৩৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৮৪ হাজার ৬৫৪ জনের। বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ১০৭ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২৬৭ জন ও হোম আইসোলেশনে আছেন দুই হাজার ৮৪০ জন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.  আব্দুল মোমেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে মানুষ আগের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার নতুন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়ায় একজনের দ্বারা অনেক লোক আক্রান্ত হতে পারেন। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসককে আরও কঠোর হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড ঘোষণার পর থেকে রোগীর চাপ বাড়তে আছে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের লোকবল কম। এ জন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিদিনই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালেও রোগীর চাপ বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আক্রামুজ্জামান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে ২০০ শতাধিক পয়েন্টে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা চালু রয়েছে। বেশি গুরুতর রোগীদের জন্য আলাদাভাবে পেয়িং ওয়ার্ডে রাখা হয়।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবিরের বলেন, গ্রামে গ্রামে প্রশাসনের নজরদারি ও তদারকি আরও বাড়াতে হবে। উপসর্গ নিয়ে কেউ যেন বাড়িতে বসে না থাকেন। তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া মৃত্যুহার কমানো সম্ভব নয়। চিকিৎসা নিতে যত দেরি হবে, মৃত্যুর ঝুঁকি তত বাড়বে।