ঘরে বসেই সেমিস্টার ফাইনাল দেবেন হাজী দানেশের শিক্ষার্থীরা

শিক্ষা

পরীক্ষার্থীর সামনে ভিডিও মুডে থাকবে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ কিংবা স্মার্ট ফোন। পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট পূর্বে অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হবে প্রশ্নপত্র। বাড়িতে বসেই পরীক্ষা দেবেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা শেষে ২০ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র স্ক্যান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ই-মেইলে পাঠাতে হবে। কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত ই-মেইল ডাউনলোড করে স্ব স্ব বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠাবেন।

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে আনতে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যিালয় অনলাইনে অ্যাপসে এভাবেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা হবে প্রতিদিন তিন শিফটে। প্রতিদিন প্রায় আট শ শিক্ষার্থী এভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নেবেন। ইতিমধ্যে সব অনুষদ/বিভাগের পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষকদেরও পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া গুগল ক্লাসরুম ও জুম অ্যাপস ব্যবহার করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জানাতে কয়েকটি ভিডিও টিউটোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের অনলাইনে কুইজ, মিড ও ডেমো পরীক্ষাও গ্রহণ করা হয়েছে।

পরীক্ষা গ্রহণের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান সিএসই অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহাবুব হোসেন জানান, গুগল ক্লাসরুম ও জুম অ্যাপসের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন হবে। একদল শিক্ষক প্রতিনিধি জুম অ্যাপসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবেন। আর প্রশ্নপত্র প্রেরণ, খাতা গ্রহণ করাসহ অন্যান্য কার্যক্রম করা হবে গুগল ক্লাসরুম অ্যাপসে। বিদ্যু কিংবা দুর্বল নেটওয়ার্কজনিত কোনো ক্রটি হলে পরীক্ষার্থীদের করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের শহরে কিংবা শহরের নিকটবর্তী কোনো এলাকায় থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া এ ফোর মাপের কাগজে উত্তর লেখাসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন এম কামরুজ্জামান। যোগদানের পরের দিনই সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের ডিনদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭তম একাডেমিক কাউন্সিলে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাবিপ্রবির আইকিউএসির আয়োজনে ১৪ জুলাই থেকে পরীক্ষা গ্রহণসংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষকদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক সাইফুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে গরিব ও মেধাবী ৯৩৯ জন শিক্ষার্থীকে শর্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্মার্ট ফোন সরবরাহ করেছে। প্রত্যেকের প্রযুক্তিগত সমস্যা নিরসনকল্পে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জুম অ্যাপসের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক আছেন। যদি টেকনিক্যাল কোনো ক্রটি দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ ওই শিক্ষার্থী দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে অবহিত করবেন।

উপাচার্য এম কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা ও পরামর্শক্রমে এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। করোনা মহামারিতে শিক্ষার্থীরা যেন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন, সে জন্য এ ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যেহেতু এবারেই প্রথম অনলাইনের এই পরীক্ষা পদ্ধতি, সে ক্ষেত্রে যদি কোনো ত্রুটি–বিচ্যুতি থাকে, পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।