ডি মারিয়ার গোলে এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা

খেলাধুলা

কোপা আমেরিকার বহুল কাঙ্ক্ষিত ফাইনাল ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে। আর লিড নিয়ে এগিয়ে আছে আর্জেন্টিনা।

আগের কয়েক ম্যাচে বদলি নেমে দুর্দান্ত খেলা আনহেল ডি মারিয়াকে আজ প্রথম একাদশে সুযোগ দেন কোচ স্কালোনি। আর সুযোগ পেয়েই নিজের জাত চিনিয়ে দেন ডি মারিয়া। তার গোলেই ব্রাজিলের বিপক্ষে কোপা আমেরিকার ফাইনালে লিড নিয়েছে আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেছেন ব্রাজিলের ফ্রেড। ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় মন্তিয়েলকে ফাউল করার জন্য রেফারি কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন তাকে।

১০ মিনিটের মধ্যে বেশ কয়েকটা কড়া ট্যাকল চোখে পড়ে। উভয় দলই একে অপরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ।

১৩ মিনিটের মাথায় বক্সে নেইমারের দিকে বল বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন রিচার্লিসন। তবে বাধা দেন ওতামেন্দি।

পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি নেইমার।  ওতামেন্দির পায়ে প্রতিহত হয় তা। এই ১৩ মিনিটে বারবার খেই হারাতে দেখা গেছে নেইমারকে।

২২ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত এক গোলে আর্জেন্টিনাকে ১-০ এগিয়ে নেন ডি মারিয়া। ফাইনালের প্রথম একাদশে ডি মারিয়াকে ফিরিয়ে তার উপর আস্থা রেখেছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ। আস্থার যথাযথ মর্যাদা রাখেন তিনি।

মাঝমাঠ থেকে দি পলের বাড়ানো বল ধলে ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসনের মাথার উপর তা জালে জড়িয়ে দেন ডি মারিয়া।

এক্ষেত্রে ব্রাজিল ডিফেন্ডার রেনান লোদির সামনে সুযোগ ছিল ডি মারিয়াকে প্রতিহত করার। যদিও তিনি ব্যর্থ হন। তার ভুলের সুযোগে আর্জেন্টিনা ম্যাচে লিড নিয়ে নেয়।

২০০৪ সালে সিজার দেলগাদোর পর ডি মারিয়া প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার, যিনি কোপার ফাইনালে গোল করলেন।

এছাড়া ২০০৫ কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালের পর এই প্রথম কোনো ফাইনালে গোল পেল দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

২৬ মিনিটের মাথায় ক্যাসেমিরোর শটকে ঠেকিয়ে দেন আজেন্টাইন গোলরক্ষক মার্তিনেজ। ৩০ মিনিটের খেলা শেষ হয়ে গেলেও ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমারকে সেভবে সক্রিয়ে দেখা যায়নি। ৩২ মিনিটে মেসির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

২৫ গজের বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি-কিক পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। ৩৪ মিনিটে নেইমারের ফ্রি-কিক দেওয়ালে প্রতিহত হয়।  

২৯তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শট নেন দি মারিয়া। সেই শট থামিয়ে দেন ব্রাজিল অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। চার মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মেসি।

৪২ মিনিটের মাথায় এভার্টনের আক্রমণ প্রতিহত করেনি এমি. মার্তিনেজ।

৪৩তম মিনিটে রিশার্লিসনের ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি লুকাস পাকুয়েতা।

৪৪ মিনিটে নেইমারের কর্ণার থেকে বল ধরে আক্রমণ শানান রিচার্লিসন। যদিও তা মাঠের বাইরে চলে যায়।

প্রথমার্ধে ১ মিনিট সময় সংযোজিত হয়। তাতে সমতায় ফিরতে পারেনি তিতের শিষ্যরা। ডি মারিয়ার গোলে বিরতিতে ১-০ এগিয়ে আর্জেন্টিনা।

এক গোল পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে ব্রাজিল। প্রথমার্ধে আশানুরুপ না খেলায় ফ্রেডের পরিবর্তে রবার্তো ফিরমিনোকে মাঠে নামান ব্রাজিল কোচ তিতে।

৪৮ মিনিটের মাথায় রিচার্লিসন আর্জেন্টিনার বিপজ্জনক জায়গায় বল নিয়ে ঢুকে পড়েন। যদিও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

৫১ মিনিটের মাথায় নেইমারকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন অর্জেন্টিনার লো সেলসো। ৫৪ মিনিটের মাথায় পারেদেসকে তুলে নিয়ে রদরিগেজকে মাঠে নামান আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনি।

আজ ফাইনালে ব্রাজিল সেমফাইনালের অপরিবর্তিত প্রথম একাদশ নিয়েই নেমেছে। এমনকি তাদের পরিবর্ত ফুটবলারের তালিকাও আগের ম্যাচের মতোই।

তবে চমক দেখালেন কোচ স্কালোনি। আর্জেন্টিনার প্রথম একাদশে একসঙ্গে পাঁচটি রদবদল হয়েছে আজ। রিজার্ভ বেঞ্চে পাঠানো হয় জেল্লা, গঞ্জালেজ, মলিনা, ট্যাগলিয়াফিকো ও রদরিগেজকে।

প্রথম একাদশে রাখা হয়েছে আকুনা, রোমেরো, মন্তিয়েল, পারেদেস ও ডি মারিয়াকে।

আর্জেন্টিনার প্রথম একাদশ

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, দি পল, মেসি, ওতামেন্দি, লো সেলসো, মার্টিনেজ, আকুনা, রোমেরো, মন্তিয়েল, পারেদেস ও ডি মারিয়া।

ব্রাজিলের প্রথম একাদশ

এডারসন, দানিলো, থিয়াগো সিলভা, মারকিনহোস, ক্যাসোমিরো, রিচার্লিসন, ফ্রেড, নেইমার, রেনান লোদি, লুকাস পাকুয়েতা ও এভার্টন।