স্কলারশিপ নিয়ে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন ১০ কওমি শিক্ষার্থী

শিক্ষা

মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ লাভ করেছেন ঢাকার দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার ১০ শিক্ষার্থী। ২ মে মিসরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা।

শনিবার রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা ও সম্মাননার আয়োজন করা হয়। এতে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তাদের শিক্ষার্থীদের সফলতার গল্প তুলে ধরে। 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরীয় দূতাবাসের প্রশাসনিক অ্যাটাচি আয়মান কামাল হাম্মাদ, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী, আল্লামা আজীমুদ্দীন, জামিয়া ইকরার পরিচালক মাওলানা আরিফ উদ্দিন মারুফ, এসএসটিএস বাংলাদেশের মহাপরিচালক ড. সাঈদ সাবরীসহ দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম, আজহারী স্কলার, বিদেশি কূটনীতিক ও বিভিন্ন সংস্থা ও মাদ্রাসার পরিচালকরা অংশ নেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরীয় দূতাবাসের প্রশাসনিক অ্যাটাচি আইমান কামাল হাম্মাদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে এ বছরও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে মিসরে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য আমরা ভিসা প্রদান করেছি। শুধুমাত্র আল-আযহার নয় মিসরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা পড়াশোনার জন্য যাচ্ছে। মুআদালার পর ঢাকার দারুল আরকাম থেকে শিক্ষার্থীরা আল আজহারের উদ্দেশ্যে রওনা করছে। আমি স্কলারশিপপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানাই। 

স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আল্লামা নদভী বলেন, বেফাক তোমাদের সফলতায় গর্বিত। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা সারা বিশ্বব্যাপী ইসলামের সুমহান দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকুক। তোমরা দেশের গণ্ডিতে যেভাবে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছ আশা করব আন্তর্জাতিক মহলেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখবে। 

মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা শায়েখ সানাউল্লাহ আযহারী বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চান; কিন্তু সরকারি কোনো সার্টিফিকেট না থাকায় তাদের সময় অপচয় হয় এবং অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। এজন্য জ্ঞানপিপাসু সেসব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি মুআদালা (সমমান চুক্তি) করেছি। আমাদের এখান থেকে সানাবিয়া উলয়া (উচ্চ মাধ্যমিক) পড়ে যে কেউ আল আজহারের যেকোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। 
 

উল্লেখ্য, রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া একমাত্র কওমি মাদ্রাসা, যেটির সঙ্গে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি মুআদালা (সমমান চুক্তি) রয়েছে। অফিসিয়ালি চুক্তির পর এ বছর প্রতিষ্ঠানটির স্কলারশিপ নিয়ে ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী  উচ্চতর পড়াশোনার জন্য মিসরের সুপ্রসিদ্ধ ও ঐতিহাসিক আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য সুযোগ পেয়েছেন। 

পথ চলার কয়েক বছরেই প্রতিষ্ঠানটির এমন অভাবনীয় সাফল্যে আনন্দিত দেশের চিন্তাশীল আলেমরা। 

দীনিয়াত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতি সালমান আহমদ বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের সামনে জ্ঞানের বিশাল এক দুয়ার উন্মোচিত হলো। একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের সন্তানরা যাচ্ছে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। আগামীতে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডগুলো এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে বলে আশা করছি।